আগামী বছরের শুরুতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য অনুর্ধ ১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কার মধ্যে দেশটির সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে টুর্নামেন্টের জন্যে সব ধরণের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল বা আইসিসি’র প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা বৈঠক করলে তাকে এই আশ্বাস দেয়া হয়।
নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কারণে অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ বাংলাদেশে হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় থাকলেও বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তারা আশাবাদী যে টুর্নামেন্টটি শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশেই হবে।
আইসিসি’র প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসন বাংলাদেশ সফর করছেন অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টের নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে।
আইসিসি’র সর্বশেষ বৈঠকে বিশ্বকাপ আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশকেই ঠিক রাখা হয়েছিল, তবে বলা হয়েছিল চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে সন্তুষ্ঠ হওয়ার পর।
মি. রিচার্ডসন তাঁর বাংলাদেশ সফরে এরই মধ্যে সরকারী নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন, খতিয়ে দেখেছেন নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশের পরিকল্পনার বিভিন্ন দিক। কিন্তু বাংলাদেশে নিরাপত্তা নিয়ে আইসিসি’র মূল উদ্বেগের বিষয়টি আসলে কী?
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বা বিসিবি’র পরিচালক জালাল ইউনুস বলেন, “তাদের উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে এখানে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এর আগে অস্ট্রেলিয়া আসেনি। ওরা জানতে চাইছে আমাদের নিরাপত্তার আয়োজন সম্পর্কে। নিরাপত্তা সম্পর্কে তাদের আমরা আশ্বস্ত করেছি যে বিদেশি রাষ্ট্রীয় অতিথিদের যে পর্যায়ের নিরাপত্তা দেয়া হয় সেই পর্যায়ের নিরাপত্তা তাদের দেয়া হবে।”
আইসিসি’র প্রধান নির্বাহী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও দেখা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কর্মকর্তারা বিবিসিকে বলেছেন যে শেখ হাসিনা অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপের জন্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
একই রকম প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, যখন মি. রিচার্ডসন তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, “তাদের আমরা বলেছি এই টুর্ণামেন্টকে প্রোটেকশন দেয়ার জন্য আমরা তৈরি। আমি বিশ্বাস করি এই খেলাটি সময়মত হবে এবং সবাই আসবে।”
২০১৪ সালে বাংলাদেশে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ হয়েছিল, আর তখন নির্বাচনের কারণে বাংলাদেশে এক ধরণের অনিশ্চয়তার পরিবেশও বিরাজ করছিল।
তবে মার্চে শুরু হওয়া ঐ টুর্নামেন্ট কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই শেষ হয়। চলতি বছরে অবশ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল বাংলাদেশ সফরে আসেনি।
এর পরপরই বাংলাদেশে দুজন বিদেশী নাগরিক খুন হন, আর এর দায়-দায়িত্ব স্বীকার করে ইসলামিক স্টেট জঙ্গী গোষ্ঠী। তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইশফাক ইলাহী চৌধুরী মনে করেন, অনুর্ধ ১৯ টুর্নামেন্টের ক্ষেত্রে ঝুঁকি তেমন নেই ।
তিনি বলেন, “এর চেয়ে অনেক বেশি ঘটনা অন্যান্য দেশে হচ্ছে। আমাদের থ্রেট লেভেল এখনো অনেক অনেক কম। আমার মনে হয় যারা আসবে তাদের নিরাপত্তা দেয়ার ক্ষমতা সরকারের আছে।”
অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ জানুয়ারির ২২ তারিখে শুরু হয়ে ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখে শেষ হওয়ার কথা। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কক্সবাজার হলো বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোর ভেন্যু।